হোক ইচ্ছের বহিঃপ্রকাশ...

মানালির দিনগুলি – পর্ব ০২

আজ আমাদের মানালিতে ঘোরা-ঘুরি ২য় দিন। আজ আমাদের মূল লক্ষ মানালির বিভিন্ন টুরিস্ট স্পট ঘুরে দেখব। আজ আমরা যাব রোথাং পাসে। পথে পরবে কথি ভিলেজ গুলাবা ভিউ পয়েন্ট, রাহালা ফলস, মারি ভিউ পয়েন্ট সহ আরও কিছু ভিউ পয়েন্ট। এছাড়া ফিরতি পথে সোলাং ভ্যালি, বিয়াস নদী এবং অটল ট্যানেল ঘুরে আসব। আশা করি আমাদের এই ভ্রমণ গল্প ভাল লাগবে আপনাদের।

কথি ভিলেজ

আগের দিন মল রোড থেকে ফেরার সময় গাড়ি ঠিক করে এসেছিলাম। চা খেয়ে সকাল সকাল বের হয়ে গেলাম। ড্রাইভারের নাম ভারত সিং। সবুজ পাহাড়ি পথ ধরে চলতে লাগলাম রোথাং পাসের দিকে এইটা অফ সিজন। তাই রোথাং পাসে তেমন লোকসমাগম নেই। সিজনে নাকি ট্রাফিক জ্যাম লেগে যায়। এত টুরিস্ট আসে এখানে। তবে রোথাং আমাদের মূল উদ্দেশ্য ছিল না। আমরা রাস্তার দুই ধারে অপূর্ব প্রাকৃতিক দৃশ্য উপভোগ করতে ব্যস্ত ছিলাম। পাহড়ের মাঝে মেঘের লুকোচুরি খেলা দেখতেই আমাদের খুব ভাল লাগে।

বিয়াস নদী

পথে পরল কথি ভিলেজ। সুন্দর ছিমছাম গ্রাম। পাহাড়ি গ্রামে হেটে হেটে দেখতে হলে অনেক সময় লাগে। আমরা দূর থেকে দেখে আবার রওনা হলাম। কিন্তু হঠাৎ গাড়ি থেমে গেল। দেখলাম সামনে রাস্তা ব্লক হয়ে আছে। আমাদের সামনে প্রচুর গাড়ি সারিবদ্ধ দাঁড়ানো। শুনালাম একটা গাড়িতে নাকি আগুন লেগে গেছে। ফায়ার সার্ভিস না আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। কি আর করা! বসে বসে প্রকৃতির অপরূপ রূপ উপভোগ করতে লাগলাম। সবশেষে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি আসল। আমরা আবার রওনা হলাম। পথে পরল গুলাবা ভিউ পয়েন্ট। অপূর্ব সুন্দর একটি জায়গা। পাহাড় আর মেঘে ঘেরা এই জায়গাটাতে অনেক সময় আমরা মুগ্ধ হয়ে বসে ছিলাম।

রোথাং পাস

তারপর আবার রওনা হলাম। পথে যেতে যেতে দেখে নিলাম রাহালা ফলস। এরপর চললাম মারিহ নামক একটি জায়গায়। সেখানে পনির পরোটা আর চা খেয়ে নিলাম। জায়গাটা বেশ উচুতে। তাই আমাদের কিছুটা ঠান্ডা লাগছিল। এখান থেকেও সুন্দর ভিউ পাওয়া যায়। কিছু সময় এখানে কাটিয়ে আমরা আবার রওনা হলাম রোথাং এর উদ্দেশ্যে। রোথাং পৌঁছতে পৌঁছতে দুপুর হয়ে গেলে রোথাং পাস হল প্রায় ১৩ হাজার ফুট উপরে অবস্থিত একটি পাস যা কুল্লু উপত্যকা এবং স্পিতি উপত্যকাকে সংযুক্ত করেছে। এটি মানালি থেকে ৫১ কি.মি. দূরে অবস্থিত। এখানে ঘোড়া ভাড়া পাওয়া যায়। চাইলে ঘোড়ায় করে ঘুরতে পারেন। ছোট গাড়ির ব্যবস্থা আছে। আপনাকে আরও উপরে নিয়ে যাবে। শীতের কাপড় ভাড়া পাওয়া যায়। নানা রকম একটি ভিজিট আছে। চাইলে করতে পারেন। আমাদের তেমন ইচ্ছে ছিল না। তাই কিছু সময় এখানে কাটিয়ে আমরা রওনা হলাম সোলাং ভ্যালির দিকে।

সোলাং ভ্যালি

সোলাং ভ্যালিতে রোপ ওয়ে আছে। প্যারা গ্লাইজিং এর ব্যবস্থাও আছে। সোলাং ভ্যালি মানালির খুব জনপ্রিয় টুরিস্ট এলাকা। আমরা এখানে কিছু সময় ঘুরলাম, ছবি তুললাম। তারপর চললাম বিয়াস নদী দেখতে। মানালির পাশ দিয়ে এই নদী বয়ে চলেছে। বাংলায় একে আমরা বলি বিপাশা নদী। অপূর্ব সুন্দর এই নদীর ধারে বেশ অনেক সময় আমরা মুগ্ধ দর্শক হয়ে বসে রইলাম। নদীর ধারে ১৯৪৭ নামের একটি রেস্টুরেন্ট রয়েছে। সেখান থেকে নদীর চমৎকার দৃশ্য উপভোগ করা যায়। এই রেস্টুরেন্ট এর বিপরীত পাশে রয়েছে একটি পেস্ট্রি শপ। অসম্ভব সুন্দর এখানকার পেস্ট্রি। মানালিতে আসলে একানকার পেস্ট্রি না খেয়ে যাবেন না। ঘোরা-ঘুরি শেষ করে যখন হোটেলে ফিরলাম তখন প্রায় সন্ধ্যা। আমরা ফ্রেস হয়ে আগামীকালের জন্য প্রস্তুতি নিতে লাগলাম। কাল আমরা মানালির অন্যান্য টুরিস্ট স্পট ঘুরব। আপনাদেরও পড়ার আমন্ত্রণ রইল।

মানালির মজাদার পেস্ট্রি শপ
Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp

অন্যান্য লেখা গুলো পড়ুন