হোক ইচ্ছের বহিঃপ্রকাশ...

জুলাই গণ অভুত্থানের আদর্শ হোক আমাদের প্রেরণা

পুলিশের একটি সাঁজোয়া যানের ওপর থেকে একজনকে টেনে নিচে ফেলা হলো। সাঁজোয়া যানের চাকার কাছে সড়কে পড়ে ছিল দেহটি। তখনও প্রাণ ছিল যুবকটির শরীরে। এরপর পুলিশের এক সদস্য এক হাত ধরে তাঁকে টেনে আরেকটু দূরে সড়কে ফেলে রাখলো। পরে কয়েকজন পুলিশ মিলে তাঁকে টেনে সড়ক বিভাজকের ওপর দিয়ে ঠেলে অপর পাশে ফেলে দেল। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময়ের একটা ভিডিওতে আমরা এমনটাই দেখেছিলাম সবাই। অমানবিক এই দৃশ্য দেখে আমাদের সকলের হৃদয় বিদীর্ণ হয়েছিল। একজন জীবন্ত মানুষকে এভাবে কোনো মানুষ নিচে ফেলে দিতে পারে, ভাবনারও অতীত। শহিদ এই ভাইটির নাম শাইখ আশহাবুল ইয়ামিন। তিনি মিরপুরের মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির (এমআইএসটি) কম্পিউটারবিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।

রাজধানীর বনানী বিদ্যানিকেতন স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এসএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়ে পাস করে সেই বিদ্যাপীঠের কলেজে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছিল গোলাম নাফিজ। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় রিকশার পাদানিতে করে এক রিকশাচালক তাকে বাঁচানোর জন্য রাজধানীর ফার্মগেটের একটি হাসপাতালে নিয়ে যায়। আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা বাধা দেয়াতে সেই হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে পারেননি আমাদের এই ছোট ভাইটি । দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার ফটোসাংবাদিক প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন এই ঘটনার এবং তখনও ১৭ বছরের নাফিজ বেঁচে ছিল। কী নির্মম নিষ্ঠুর হলে মানুষ মৃত্যুর মুখে পতিত, গুলিবিদ্ধ একজনকে চিকিৎসা নিতে বাধা দেয়া হয়।

আমরা আজ সবাই আছি, ছোট ছোট এই ভাইগুলো আর নেই। প্রাণোচ্ছল, মেধাবী হাজার হাজার যুবক, তরুণ, শিশুর এমন মর্মান্তিক মৃত্যু কোন ভাবেই মেনে নেয়া যায় না। পাখির মত গুলি করে হত্যা করা হয়েছে নিস্পাপ এই প্রাণগুলোকে। এমন দানবীয় বর্বরোচিত সকল হত্যার হুকুম যারা দিয়েছে, নির্দেশ যারা পালন করেছে সকলের বিচারের আওতায় আনতে হবে। তৎকালীন সরকারপ্রধান শেখ হাসিনা, দায়িত্বে নিয়োজিত মন্ত্রী, সাংসদ সহ সংশ্লিষ্ট সকলের সর্বোচ্চ শাস্তি হোক।

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp

অন্যান্য লেখা গুলো পড়ুন